Cherry fruit11

চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ

চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ জানলে আপনি অবাক হবেন, কারণ ছোট এই ফলের ভেতরে লুকিয়ে আছে স্বাস্থ্য রক্ষার অসাধারণ ক্ষমতা। কেন প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় চেরি ফল রাখা উচিত, তা জানতে পড়ে যান পুরো লেখাটি।চেরি ফল পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অত্যন্ত জনপ্রিয় হলেও বাংলাদেশেও এখন ধীরে ধীরে এর ব্যবহার বাড়ছে। এই ছোট আকারের লালচে বা কালচে রঙের ফল দেখতে যেমন আকর্ষণীয়, খেতেও তেমনি সুস্বাদু। গরমের মৌসুমে বা হালকা ঠান্ডা আবহাওয়ায় বাজারে চেরি ফল পাওয়া যায়। মূলত আমদানি নির্ভর হওয়ায় এর দাম তুলনামূলক বেশি হলেও স্বাস্থ্যগুণে ভরপুর হওয়ায় অনেকেই এটি খুঁজে নেন।

চেরি ফলে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ফাইবার থাকে যা শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। যারা সৌন্দর্য সচেতন, তারা জানেন চেরি ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বক উজ্জ্বল করতে ভূমিকা রাখে। আবার যারা নিয়মিত ব্যায়াম করেন, তাদের জন্য এই ফল শক্তি যোগায় এবং ক্লান্তি দূর করে।

বাংলাদেশে বিশেষ করে বড় শহরগুলোতে সুপারশপ, অনলাইন মার্কেট ও কিছু বড় ফলের দোকানে চেরি পাওয়া যায়। অনেক সময় বিদেশ থেকে আনা চেরির পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বার্বাডোস চেরিও বিক্রি হয়। যদিও আমদানিকৃত চেরি বেশি জনপ্রিয়, কারণ এগুলো দেখতে আকর্ষণীয় এবং স্বাদে সমৃদ্ধ।

চেরি ফল খাওয়া শুধু আনন্দের নয়, এটি স্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ। নিয়ম মেনে খেলে শরীরের নানা রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে। তবে অতিরিক্ত খাওয়া কিংবা যাদের কিছু স্বাস্থ্য সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য এটি কিছুক্ষেত্রে ক্ষতিকরও হতে পারে। এই ব্লগ পোস্টে আমরা চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে বিস্তারিত জানবো।

চেরি ফল খাওয়ার নিয়ম

Cherry fruit2

চেরি ফল খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলা দরকার। সাধারণত চেরি ধুয়ে সরাসরি খাওয়া সবচেয়ে ভালো। তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোভাবে পরিষ্কার করে নিতে হবে, কারণ আমদানিকৃত ফলে অনেক সময় রাসায়নিক বা প্রিজারভেটিভ ব্যবহার করা হয়।

চেরি খাওয়ার সবচেয়ে ভালো সময় সকালে বা বিকেলে হালকা ক্ষুধার সময়। খালি পেটে চেরি খাওয়া অনেকের জন্য উপকারী হলেও যাদের গ্যাস্ট্রিক সমস্যা আছে, তাদের জন্য এটি সমস্যা তৈরি করতে পারে। তাই খাওয়ার আগে নিজের শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী সতর্ক হওয়া উচিত।

এক দিনে কতগুলো চেরি খাওয়া উচিত, তা নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। সাধারণত ১০–১২ টির বেশি খাওয়া উচিত নয়। অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া বা পেটের সমস্যা হতে পারে। আবার চেরি খাওয়ার পর সঙ্গে সঙ্গে পানি খাওয়া উচিত নয়, কারণ এতে হজমের সমস্যা হতে পারে।

শিশুদের চেরি খাওয়ানোর সময় বীজ বের করে খাওয়ানো জরুরি। কারণ বীজ ছোট হলেও গিলতে গিয়ে সমস্যা হতে পারে। আর ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সীমিত পরিমাণে খাওয়া ভালো।

যারা ওজন কমাতে চান, তারা বিকেলের নাস্তায় বিস্কুট বা ভাজাপোড়ার পরিবর্তে চেরি খেতে পারেন। এতে পেট ভরবে, আবার অপ্রয়োজনীয় ক্যালোরিও শরীরে জমবে না।

চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ

Cherry fruit3

চেরি ফলকে অনেকেই “সুপারফুড” বলে থাকেন। কারণ, এতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও খাদ্য আঁশ (ফাইবার) প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এসব উপাদান শরীরকে ভেতর থেকে সুস্থ রাখে, রোগ প্রতিরোধ করে এবং দৈনন্দিন জীবনকে প্রাণবন্ত করে তোলে। চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ সম্পর্কে নিম্নে বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হলো-

১. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে

চেরি ফলে প্রচুর ভিটামিন সি থাকে, যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে কার্যকর। নিয়মিত চেরি খেলে ঠান্ডা-কাশি, ফ্লু, ইনফেকশনসহ বিভিন্ন মৌসুমি রোগ প্রতিরোধে শরীর শক্তিশালী হয়। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকার কারণে এটি শরীরের ভেতরকার টক্সিন দূর করে এবং ক্ষতিকর ফ্রি-র‍্যাডিক্যালের আক্রমণ থেকে কোষকে রক্ষা করে। ফলে দীর্ঘমেয়াদে ক্যান্সারের ঝুঁকি কমায়। বাংলাদেশে বর্ষাকালে সর্দি-কাশি খুব সাধারণ সমস্যা, আর চেরি তখন শরীরকে প্রতিরোধে সহায়তা করতে পারে।

২. ত্বক উজ্জ্বল ও তরুণ রাখে

চেরি ফলে থাকা ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ত্বকের জন্য অত্যন্ত উপকারী। এগুলো ত্বকে কোলাজেন উৎপাদন বাড়ায়, যা ত্বককে টানটান রাখে এবং বলিরেখা কমাতে সাহায্য করে। যারা প্রতিদিন বাইরে যান, তাদের ত্বক সূর্যের আলো ও ধুলাবালির কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চেরি খেলে ভেতর থেকে ত্বকের সুরক্ষা হয় এবং প্রাকৃতিক উজ্জ্বলতা বজায় থাকে। নিয়মিত খেলে ত্বক শুষ্ক হয় না এবং ব্রণ-ফুসকুড়ির সমস্যাও কমে যায়।

৩. হৃদরোগের ঝুঁকি কমায়

চেরি ফলে পটাশিয়াম ও অ্যান্থোসায়ানিন নামক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা হৃদরোগ প্রতিরোধে সহায়ক। এটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে, ধমনী পরিষ্কার রাখে এবং কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়। বাংলাদেশের অনেক মানুষ উচ্চ রক্তচাপ বা হৃদরোগে ভুগে থাকেন, তাদের জন্য চেরি একটি প্রাকৃতিক উপকারী ফল হতে পারে। নিয়মিত খেলে হার্ট অ্যাটাক, স্ট্রোকের ঝুঁকি অনেকটাই কমে যায়।

৪. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে সহায়ক

চেরি প্রাকৃতিকভাবে মিষ্টি হলেও এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স তুলনামূলক কম। অর্থাৎ এটি রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বাড়ায় না। ফলে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য সীমিত পরিমাণে চেরি খাওয়া উপকারী হতে পারে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ইনসুলিনের কার্যকারিতা বাড়ায়, যা রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে রাখে। তবে অবশ্যই ডাক্তারি পরামর্শ নিয়ে পরিমাণ বুঝে খাওয়া জরুরি।

৫. ঘুমের মান ভালো করে

চেরি ফলে প্রাকৃতিক মেলাটোনিন রয়েছে, যা ঘুমের হরমোন নামে পরিচিত। যারা অনিদ্রা বা অস্থির ঘুমের সমস্যায় ভুগেন, তাদের জন্য চেরি খুব উপকারী। রাতে ঘুমানোর আগে কয়েকটি চেরি খেলে ঘুম দ্রুত আসে এবং গভীর হয়। বাংলাদেশে অনেকেই কাজের চাপ বা মানসিক টেনশনে ঘুমাতে পারেন না, তাদের জন্য চেরি হতে পারে প্রাকৃতিক সমাধান।

৬. হাড় ও দাঁত মজবুত করে

চেরি ফলে ক্যালসিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম ও ভিটামিন কে রয়েছে, যা হাড়কে মজবুত করে। বিশেষ করে শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য এটি উপকারী। গর্ভবতী মায়ের ক্ষেত্রেও হাড় ও দাঁতের জন্য চেরি পুষ্টি সরবরাহ করে। দাঁতের জন্যও এটি ভালো, কারণ এতে থাকা মিনারেল দাঁতের এনামেল শক্তিশালী করে। তবে অবশ্যই খাওয়ার পর দাঁত পরিষ্কার করতে হবে যাতে চিনি জমে না থাকে।

৭. রক্তশূন্যতা দূর করতে সাহায্য করে

চেরি ফলে আয়রন ও ভিটামিন সি থাকে, যা রক্তে হিমোগ্লোবিন তৈরিতে সহায়ক। বাংলাদেশে বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের নারীরা রক্তশূন্যতায় বেশি ভোগেন। চেরি খেলে শরীরে লোহিত কণিকার সংখ্যা বাড়ে এবং ক্লান্তি কমে যায়। যারা নিয়মিত কাজের চাপে দুর্বলতা অনুভব করেন, তাদের জন্য চেরি একটি ভালো বিকল্প।

৮. ওজন কমাতে সহায়ক

চেরি ক্যালোরি কম কিন্তু ফাইবার বেশি। ফলে এটি খেলে পেট ভরে যায়, কিন্তু বাড়তি ক্যালোরি জমে না। যারা ডায়েট করছেন বা ওজন কমানোর চেষ্টা করছেন, তাদের জন্য বিকেলের নাস্তায় চেরি দারুণ একটি বিকল্প। ভাজা-পোড়া খাবারের পরিবর্তে চেরি খেলে পেটও ভরে যায় এবং স্বাস্থ্যও ভালো থাকে।

৯. মানসিক চাপ কমায়

চেরি খাওয়া মেজাজ ভালো করতে সাহায্য করে। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন মস্তিষ্কে সেরোটোনিন নিঃসরণ বাড়ায়, যা মানসিক চাপ ও ডিপ্রেশন কমাতে সহায়ক। নিয়মিত চেরি খেলে মন শান্ত থাকে, কাজের প্রতি মনোযোগ বাড়ে এবং হতাশা কমে যায়। বিশেষ করে ব্যস্ত জীবনযাপনকারী মানুষের জন্য চেরি মানসিক স্বাস্থ্য রক্ষার একটি প্রাকৃতিক উপায়।

১০. লিভারের সুরক্ষা দেয়

চেরি ফল লিভারের জন্যও উপকারী। এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট লিভারের ভেতরের টক্সিন দূর করে এবং ফ্যাটি লিভারের ঝুঁকি কমায়। যারা অতিরিক্ত ভাজাপোড়া বা তৈলাক্ত খাবার খান, তাদের লিভার দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত হয়। চেরি খেলে লিভার পরিষ্কার থাকে এবং হজম ক্ষমতাও ভালো হয়। ফলে শরীর অনেকটা সতেজ থাকে।

চেরি ফলের দাম কত?

Cherry fruit4

বাংলাদেশে চেরি ফলের দাম সাধারণ ফলের তুলনায় অনেকটা বেশি। কারণ অধিকাংশ চেরি আমদানি করতে হয়, বিশেষ করে যুক্তরাষ্ট্র, তুরস্ক, ইরান বা চীন থেকে। মৌসুম অনুযায়ী দাম ওঠানামা করে।

ঢাকার সুপারশপগুলোতে প্রতি কেজি চেরির দাম সাধারণত ১৫০০ থেকে ২৫০০ টাকার মধ্যে থাকে। অনলাইনে অনেক সময় ডিসকাউন্টে কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বার্বাডোস চেরি তুলনামূলক সস্তা, প্রতি কেজি ৪০০ থেকে ৬০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়।

চেরির দাম বেশি হলেও এর পুষ্টিগুণ ও স্বাদ অনেককেই আকৃষ্ট করে। বিশেষ করে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষ, গর্ভবতী নারী কিংবা ছোট শিশুদের জন্য অনেকেই এটি কিনে থাকেন।

চেরি ফল খাওয়ার অপকারিতা সমূহ

Cherry fruit5

চেরি ফল স্বাদে ও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ হলেও সব মানুষের জন্য সমান উপকারী নয়। কারো কারো ক্ষেত্রে এটি হজমের সমস্যা, অ্যালার্জি এমনকি বিভিন্ন রোগের ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত খাওয়া বা যাদের আগে থেকেই কিছু শারীরিক সমস্যা আছে, তাদের জন্য চেরি ক্ষতিকর হতে পারে। তাই উপকারিতার পাশাপাশি সম্ভাব্য ক্ষতিকর দিকগুলোও জানা জরুরি। নিচে ১০টি প্রধান অপকারিতা বিস্তারিতভাবে দেওয়া হলো—

১. অতিরিক্ত খেলে ডায়রিয়া হতে পারে

চেরি ফলে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে। ফাইবার শরীরের জন্য উপকারী হলেও যখন অতিরিক্ত মাত্রায় খাওয়া হয় তখন এটি হজমে সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষ করে অতিরিক্ত ফাইবারের কারণে অন্ত্রের ভেতরে পানির পরিমাণ বেড়ে যায়, ফলে পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হতে পারে। শিশুদের ক্ষেত্রে এটি আরও বেশি ঝুঁকিপূর্ণ কারণ তাদের হজম ক্ষমতা তুলনামূলক দুর্বল। দিনে ১০–১২টির বেশি চেরি খেলে অনেক সময় অস্বস্তি, পেট ব্যথা বা গ্যাসের সমস্যা দেখা দিতে পারে। তাই যারা হজমজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাদের সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

২. অ্যালার্জি সমস্যা হতে পারে

চেরি ফলে কিছু প্রাকৃতিক প্রোটিন থাকে যা অনেকের দেহে অ্যালার্জি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে যারা পরাগরেণু বা নির্দিষ্ট ফলের প্রতি অ্যালার্জি আছে, তাদের ক্ষেত্রে চেরি খাওয়ার পর চুলকানি, চোখ লাল হয়ে যাওয়া, গলা চুলকানো কিংবা হাঁচির মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। তীব্র ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট পর্যন্ত হতে পারে। আবার কারো কারো ঠোঁট ফেটে যেতে পারে বা ত্বকে ফুসকুড়ি উঠতে পারে। তাই নতুন করে চেরি খাওয়া শুরু করলে আগে অল্প পরিমাণে খেয়ে শরীরের প্রতিক্রিয়া লক্ষ্য করা দরকার।

৩. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ঝুঁকি

চেরি ফলে প্রাকৃতিক চিনি বা ফ্রুক্টোজ থাকে। যদিও এটি কৃত্রিম চিনি নয়, তবুও ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য এটি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে। অতিরিক্ত চেরি খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা দ্রুত বেড়ে যেতে পারে, যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ক্ষতিকর। বিশেষ করে যাদের রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে নেই, তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা আরও বেড়ে যায়। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চেরি বেশি খাওয়া উচিত নয়।

৪. গ্যাস্ট্রিক সমস্যা বাড়াতে পারে

চেরি অ্যাসিডিক প্রকৃতির ফল হওয়ায় এটি অনেক সময় গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে। বিশেষ করে যারা আগে থেকেই অ্যাসিডিটি বা আলসারের সমস্যায় ভুগছেন, তাদের জন্য চেরি খাওয়া অস্বস্তি তৈরি করতে পারে। খালি পেটে বেশি চেরি খেলে বুক জ্বালাপোড়া, ঢেকুর তোলা কিংবা পেট ব্যথা হতে পারে। অনেকের ক্ষেত্রে এটি দীর্ঘস্থায়ী গ্যাস্ট্রিকের কারণেও পরিণত হয়। তাই গ্যাস্ট্রিক রোগীদের জন্য চেরি ফল খুব বেশি নিরাপদ নয়।

৫. রক্তচাপ হঠাৎ কমাতে পারে

চেরি ফলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। পটাশিয়াম শরীরের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত মাত্রায় গ্রহণ করলে রক্তচাপ হঠাৎ কমে যেতে পারে। যাদের আগে থেকেই লো ব্লাড প্রেসার আছে, তাদের জন্য এটি বিপজ্জনক হতে পারে। অনেক সময় মাথা ঘোরা, দুর্বলতা, এমনকি অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতিও তৈরি হতে পারে। তাই যারা রক্তচাপজনিত সমস্যায় ভোগেন, তাদের জন্য চেরি ফল সীমিত পরিমাণে খাওয়া জরুরি।

৬. দাঁতের ক্ষয় ঘটাতে পারে

চেরি ফলে প্রাকৃতিক চিনি থাকায় এটি মুখের ভেতরে ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি ঘটাতে পারে। যদি চেরি খাওয়ার পর ভালোভাবে দাঁত পরিষ্কার না করা হয়, তবে দাঁতের এনামেল ক্ষয় হতে পারে। বিশেষ করে শিশুদের দাঁত দ্রুত ক্ষয় হওয়ার ঝুঁকি থাকে। তাছাড়া চেরি অনেকটা আঠালো প্রকৃতির হওয়ায় দাঁতের ফাঁকে লেগে থেকে দীর্ঘমেয়াদে ক্যাভিটি বা মাড়ির রোগের কারণ হতে পারে। তাই চেরি খাওয়ার পর দাঁত ব্রাশ করা বা কুলি করা গুরুত্বপূর্ণ।

৭. পেট ফাঁপা বা অস্বস্তি তৈরি করে

চেরি ফলে থাকা প্রাকৃতিক সুগার অ্যালকোহল (যেমন সোর্বিটল) হজমের সময় অনেকের পেটে গ্যাস তৈরি করে। এর ফলে পেট ফাঁপা, ভারী লাগা বা অস্বস্তি হতে পারে। যাদের আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome) আছে, তাদের ক্ষেত্রে এটি আরও তীব্র হতে পারে। অনেক সময় খাবারের পর অস্বাভাবিক ঢেকুর, পেটের ভেতর শব্দ বা ব্যথা দেখা দেয়। তাই যাদের গ্যাসট্রিক প্রবণতা বেশি, তাদের জন্য চেরি অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয়।

৮. কিডনির সমস্যা বাড়াতে পারে

চেরি ফলে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম থাকে। কিডনির সমস্যা থাকলে শরীর অতিরিক্ত পটাশিয়াম বের করে দিতে পারে না। এর ফলে শরীরে পটাশিয়ামের মাত্রা বেড়ে যায়, যা হাইপারকালেমিয়া নামে পরিচিত। এই অবস্থায় হৃদস্পন্দন অনিয়মিত হতে পারে, এমনকি হৃদরোগের ঝুঁকি বাড়ে। তাই যাদের কিডনির সমস্যা আছে, বিশেষ করে ডায়ালাইসিস রোগীদের জন্য চেরি ফল সীমিত পরিমাণে খাওয়া উচিত।

৯. অতিরিক্ত চিনি জমা হতে পারে

যদিও চেরি প্রাকৃতিক চিনি সমৃদ্ধ, তবুও অতিরিক্ত খেলে শরীরে বাড়তি ক্যালোরি জমে যায়। নিয়মিত অতিরিক্ত চেরি খেলে ওজন বেড়ে যেতে পারে, শরীরে ফ্যাট জমতে পারে এবং দীর্ঘমেয়াদে মেটাবলিক সিন্ড্রোমের ঝুঁকি তৈরি হয়। যারা ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে চান, তাদের জন্য প্রতিদিন অল্প পরিমাণে খাওয়াই শ্রেয়।

১০. ঘুমঘুম ভাব আনতে পারে

চেরি ফলে প্রাকৃতিক মেলাটোনিন থাকে, যা ঘুমের জন্য সহায়ক। তবে দিনের বেলায় বেশি চেরি খেলে অনেকেরই ঘুমঘুম ভাব বা অলসতা আসতে পারে। বিশেষ করে কর্মজীবী মানুষদের জন্য এটি কাজে বিঘ্ন ঘটাতে পারে। তাই দিনে অনেক চেরি খাওয়া এড়িয়ে চলা উচিত, বরং রাতে খাওয়া ভালো।

গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার উপকারিতা সমূহ

Cherry fruit6

গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে এবং এই সময়ে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া খুব জরুরি। চেরি ফলের মধ্যে থাকা ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট মা এবং শিশুর জন্য বিশেষভাবে উপকারী। তবে অতিরিক্ত খেলে উল্টো সমস্যা হতে পারে, তাই নিয়ম মেনে সীমিত পরিমাণে খাওয়াই উত্তম। নিচে গর্ভাবস্থায় চেরি ফল খাওয়ার ১০টি গুরুত্বপূর্ণ উপকারিতা আলোচনা করা হলো।

১. শিশুর মস্তিষ্ক গঠনে সহায়ক

চেরি ফলে প্রচুর ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে, যা শিশুর মস্তিষ্কের কোষ গঠন ও স্নায়ুতন্ত্রের বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গর্ভাবস্থায় নিয়মিত সামান্য পরিমাণ চেরি খেলে শিশুর মস্তিষ্কের বৃদ্ধি সঠিকভাবে হয়। এতে নিউরনের কার্যকারিতা বাড়ে, যা ভবিষ্যতে শিশুর বুদ্ধিমত্তা ও স্মৃতিশক্তি উন্নত করতে সাহায্য করে। বাংলাদেশে অনেক গর্ভবতী মা পর্যাপ্ত ফলমূল খেতে পারেন না, ফলে শিশুর মস্তিষ্কের বৃদ্ধি ব্যাহত হয়। তাই চেরি ফল এই ঘাটতি পূরণ করতে সহায়ক হতে পারে।

২. রক্তস্বল্পতা প্রতিরোধ করে

গর্ভাবস্থায় রক্তস্বল্পতা বা অ্যানিমিয়া একটি সাধারণ সমস্যা। চেরি ফলে রয়েছে আয়রন, যা রক্তের হিমোগ্লোবিন বাড়াতে সাহায্য করে। নিয়মিত খেলে রক্তের ঘাটতি কমে এবং মা ও শিশুর জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন সরবরাহ হয়। বাংলাদেশের গ্রামীণ অঞ্চলে অনেক গর্ভবতী নারী রক্তস্বল্পতায় ভোগেন। তাদের জন্য প্রতিদিন সীমিত পরিমাণ চেরি খাওয়া খুবই উপকারী হতে পারে।

৩. হাড়ের গঠন মজবুত করে

চেরি ফলে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়াম রয়েছে, যা শিশুর হাড় ও দাঁতের সঠিক গঠন করতে সাহায্য করে। মায়ের শরীর থেকেও ক্যালসিয়ামের চাহিদা বেড়ে যায়। চেরি খেলে সেই ঘাটতি পূরণ হয় এবং শিশুর হাড় মজবুত হয়। মায়ের হাড়ও সুস্থ থাকে, ফলে গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা বা হাড় দুর্বল হওয়ার ঝুঁকি কমে যায়।

৪. রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়

চেরি ফলে ভিটামিন সি-এর আধিক্য রয়েছে। এটি মায়ের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং শিশুকেও সংক্রমণ থেকে সুরক্ষা দেয়। গর্ভাবস্থায় মায়েদের সর্দি, কাশি বা মৌসুমি রোগ হওয়ার ঝুঁকি থাকে বেশি। চেরি খেলে এসব রোগ থেকে সুরক্ষা পাওয়া যায়। একই সঙ্গে এটি দেহের ক্ষতিকর জীবাণুর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

৫. মায়ের ক্লান্তি দূর করে

গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে মায়েরা প্রায়ই ক্লান্ত বোধ করেন। চেরি ফলে প্রাকৃতিক চিনি এবং ভিটামিন বি গ্রুপ রয়েছে, যা শরীরকে শক্তি জোগায়। এছাড়া এতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের কোষকে সক্রিয় রাখে। ফলে ক্লান্তি দূর হয় এবং সারাদিন স্বাভাবিকভাবে কাজ করা সম্ভব হয়।

৬. ঘুম ভালো করতে সাহায্য করে

গর্ভাবস্থায় অনেক মা অনিদ্রা বা অস্বস্তিকর ঘুমের সমস্যায় ভোগেন। চেরি ফলে রয়েছে মেলাটোনিন, যা ঘুমের হরমোন নামে পরিচিত। এটি মায়ের ঘুমের মান উন্নত করতে সাহায্য করে। বিশেষ করে রাতে ঘুমানোর আগে অল্প কিছু চেরি খেলে গভীর ও শান্তিপূর্ণ ঘুম আসতে পারে। ফলে মা মানসিকভাবে সুস্থ থাকেন।

৭. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে

গর্ভাবস্থায় হজমের সমস্যা ও কোষ্ঠকাঠিন্য খুবই সাধারণ। চেরি ফলে প্রচুর খাদ্য আঁশ রয়েছে, যা হজমশক্তি বাড়ায় এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে। নিয়মিত খেলে মলত্যাগ স্বাভাবিক হয় এবং পেটের অস্বস্তি কমে। বাংলাদেশে গর্ভবতী নারীদের অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন, তাদের জন্য চেরি একটি উপকারী ফল হতে পারে।

৮. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে

চেরি ফলে পটাশিয়াম প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে। গর্ভাবস্থায় অনেক নারীর উচ্চ রক্তচাপ দেখা দেয়, যা মা ও শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। চেরি নিয়মিত খেলে রক্তচাপ স্বাভাবিক থাকে এবং হৃদযন্ত্রও ভালো থাকে। এটি প্রি-এক্লাম্পসিয়া প্রতিরোধেও সহায়ক হতে পারে।

৯. শিশুর ত্বক ও চুল সুন্দর করে

চেরি ফলে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন এ শিশুর ত্বক ও চুলের সঠিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করে। এতে শিশুর ত্বক মসৃণ ও সুস্থ হয় এবং চুলের গোড়া শক্ত হয়। অনেক মা বিশ্বাস করেন, গর্ভাবস্থায় ভালো ফলমূল খেলে শিশুর ত্বক উজ্জ্বল হয়। বৈজ্ঞানিকভাবে চেরির ভিটামিন উপাদানও সেই ধারণাকে সমর্থন করে।

১০. প্রসব-পরবর্তী সময়ের জন্য শরীরকে প্রস্তুত করে

চেরি ফলে প্রচুর অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, আয়রন, ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন থাকে, যা মায়ের শরীরকে প্রসব-পরবর্তী সময়ের জন্য প্রস্তুত করে। এটি শক্তি জোগায়, রক্তের ঘাটতি পূরণ করে এবং দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। ফলে প্রসবের পর দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠা সহজ হয়।

বহুল জিজ্ঞাসিত প্রশ্ন ও উত্তর সমূহ 

চেরি ফলের উপকারিতা সূমহ এই বিষয়ে আপনার মনে বেশ কয়েকটি প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে? তাহলে চলুন জেনে নেই সেই সকল প্রশ্ন ও উত্তরগুলো-

চেরি ফল প্রতিদিন খাওয়া কি নিরাপদ?

চেরি একটি পুষ্টিকর ফল, তবে প্রতিদিন অতি মাত্রায় খেলে কিছু সমস্যা দেখা দিতে পারে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগী বা যাদের হজমে সমস্যা রয়েছে, তাদের জন্য সীমিত পরিমাণে খাওয়াই ভালো। প্রতিদিন ৭–১০টি চেরি খাওয়া শরীরের জন্য উপকারী হলেও অতিরিক্ত খেলে গ্যাস, ডায়রিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যেতে পারে। তাই সুষম খাদ্যাভ্যাসের অংশ হিসেবে পরিমিত পরিমাণে খাওয়া নিরাপদ।

গর্ভবতী নারীরা কি নিশ্চিন্তে চেরি খেতে পারেন

হ্যাঁ, গর্ভবতী নারীরা চেরি খেতে পারেন এবং এটি তাদের জন্য উপকারীও বটে। এতে থাকা ভিটামিন সি, আয়রন ও ফলিক অ্যাসিড মা এবং শিশুর জন্য শক্তি জোগায় ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়। তবে যাদের ডাক্তারের নির্দেশে বিশেষ খাদ্য নিয়ন্ত্রণ আছে, তারা অবশ্যই আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে খাবেন। বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত চিনি বা হজমজনিত সমস্যা থাকলে নিয়ম মেনে সীমিত পরিমাণে খাওয়াই উত্তম।

উপসংহার

উপরোক্ত আলোচনা থেকে আমরা চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ এ  সম্পর্কে বিস্তারিত জানলাম। চেরি ফল একটি ঔষধি গুণসম্পন্ন ও সুস্বাদু ফল, যা শুধু খাওয়ার আনন্দই দেয় না বরং স্বাস্থ্যের জন্যও অসাধারণ উপকার বয়ে আনে। বাংলাদেশের মানুষ সাধারণত আম, কাঁঠাল, লিচু কিংবা কলার মতো দেশি ফলের সঙ্গে বেশি পরিচিত হলেও বর্তমানে চেরির ব্যবহার ও জনপ্রিয়তা ধীরে ধীরে বাড়ছে। এই ফলটিতে ভিটামিন সি, ভিটামিন এ, অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ফাইবার, আয়রন এবং বিভিন্ন খনিজ উপাদান রয়েছে, যা শরীরকে ভেতর থেকে শক্তিশালী করে। নিয়মিত পরিমিত চেরি খাওয়া হজমে সাহায্য করে, রক্ত পরিষ্কার রাখে, ত্বকের উজ্জ্বলতা বাড়ায় এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা শক্তিশালী করে।

তবে মনে রাখতে হবে, যেকোনো খাবারের যেমন উপকারিতা আছে, তেমনি সীমাহীন খাওয়ার ফলে কিছু ক্ষতিকর দিকও দেখা দিতে পারে। চেরি অতিরিক্ত খেলে গ্যাস, পেট ফাঁপা, ডায়রিয়া বা রক্তে শর্করার মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ঝুঁকি থাকে। বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগী, যাদের হজমশক্তি দুর্বল কিংবা গর্ভবতী নারীরা অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে খাওয়া উচিত।

চেরি ফলের দাম তুলনামূলক বেশি হলেও, বিশেষ উৎসব বা মৌসুমে মানুষ এটি কিনতে আগ্রহী হয় কারণ স্বাদের পাশাপাশি এর ভেষজ গুণও অনেক। 

সর্বোপরি বলা যায়, চেরি এমন একটি ফল যা আমাদের শরীরকে সুস্থ রাখতে পারে, তবে খাওয়ার পরিমাণ, ব্যক্তিগত শারীরিক অবস্থা ও চিকিৎসকের পরামর্শকে গুরুত্ব দেওয়া উচিত। তাই আমরা যদি সঠিক নিয়মে চেরি খাই, তবে এটি আমাদের শরীর, মন এবং সামগ্রিক সুস্থতার জন্য আশীর্বাদ স্বরূপ হবে। 

চেরি ফলের উপকারিতা সমূহ সম্পর্কিত কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে অবশ্যই নিচে কমেন্ট করবেন। আর এমন ধরনের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় গুলো বিনামূল্যে জানতে আমাদের সাথে থাকবেন। ধন্যবাদ, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *